শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৩

৬৮) সূরা আল কলম ( কলম ) আয়াত সংখাঃ ৫২ - ( মক্কায় অবতীর্ণ )



بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ 
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু। 
 
ن وَالْقَلَمِ وَمَا يَسْطُرُونَ
01
নূন। শপথ কলমের এবং সেই বিষয়ের যা তারা লিপিবদ্ধ করে, 
 
مَا أَنتَ بِنِعْمَةِ رَبِّكَ بِمَجْنُونٍ
02
আপনার পালনকর্তার অনুগ্রহে আপনি উম্মাদ নন। 
 
وَإِنَّ لَكَ لَأَجْرًا غَيْرَ مَمْنُونٍ
03
আপনার জন্যে অবশ্যই রয়েছে অশেষ পুরস্কার। 
 
وَإِنَّكَ لَعَلى خُلُقٍ عَظِيمٍ
04
আপনি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী। 
 
فَسَتُبْصِرُ وَيُبْصِرُونَ
05
সত্ত্বরই আপনি দেখে নিবেন এবং তারাও দেখে নিবে। 
 
بِأَييِّكُمُ الْمَفْتُونُ
06
কে তোমাদের মধ্যে বিকারগ্রস্ত। 
 
إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ
07
আপনার পালনকর্তা সম্যক জানেন কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি জানেন যারা সৎপথ প্রাপ্ত। 
 
فَلَا تُطِعِ الْمُكَذِّبِينَ
08
অতএব, আপনি মিথ্যারোপকারীদের আনুগত্য করবেন না। 
 
وَدُّوا لَوْ تُدْهِنُ فَيُدْهِنُونَ
09
তারা চায় যদি আপনি নমনীয় হন, তবে তারাও নমনীয় হবে। 
 
وَلَا تُطِعْ كُلَّ حَلَّافٍ مَّهِينٍ
10
যে অধিক শপথ করে, যে লাঞ্ছিত, আপনি তার আনুগত্য করবেন না। 
 
هَمَّازٍ مَّشَّاء بِنَمِيمٍ
11
যে পশ্চাতে নিন্দা করে একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে ফিরে। 
 
مَنَّاعٍ لِّلْخَيْرِ مُعْتَدٍ أَثِيمٍ
12
যে ভাল কাজে বাধা দেয়, সে সীমালংঘন করে, সে পাপিষ্ঠ, 
 
عُتُلٍّ بَعْدَ ذَلِكَ زَنِيمٍ
13
কঠোর স্বভাব, তদুপরি কুখ্যাত; 
 
أَن كَانَ ذَا مَالٍ وَبَنِينَ
14
এ কারণে যে, সে ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্ততির অধিকারী। 
 
إِذَا تُتْلَى عَلَيْهِ آيَاتُنَا قَالَ أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ
15
তার কাছে আমার আয়াত পাঠ করা হলে সে বলে; সেকালের উপকথা। 
 
سَنَسِمُهُ عَلَى الْخُرْطُومِ
16
আমি তার নাসিকা দাগিয়ে দিব। 
 
إِنَّا بَلَوْنَاهُمْ كَمَا بَلَوْنَا أَصْحَابَ الْجَنَّةِ إِذْ أَقْسَمُوا لَيَصْرِمُنَّهَا مُصْبِحِينَ
17
আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছি, যেমন পরীক্ষা করেছি উদ্যানওয়ালাদের, যখন তারা শপথ করেছিল যে, সকালে বাগানের ফল আহরণ করবে, 
 
وَلَا يَسْتَثْنُونَ
18
ইনশাআল্লাহ না বলে। 
 
فَطَافَ عَلَيْهَا طَائِفٌ مِّن رَّبِّكَ وَهُمْ نَائِمُونَ
19
অতঃপর আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে বাগানে এক বিপদ এসে পতিত হলো। যখন তারা নিদ্রিত ছিল। 
 
فَأَصْبَحَتْ كَالصَّرِيمِ
20
ফলে সকাল পর্যন্ত হয়ে গেল ছিন্নবিচ্ছিন্ন তৃণসম। 
 
فَتَنَادَوا مُصْبِحِينَ
21
সকালে তারা একে অপরকে ডেকে বলল, 
 
أَنِ اغْدُوا عَلَى حَرْثِكُمْ إِن كُنتُمْ صَارِمِينَ
22
তোমরা যদি ফল আহরণ করতে চাও, তবে সকাল সকাল ক্ষেতে চল। 
 
فَانطَلَقُوا وَهُمْ يَتَخَافَتُونَ
23
অতঃপর তারা চলল ফিসফিস করে কথা বলতে বলতে, 
 
أَن لَّا يَدْخُلَنَّهَا الْيَوْمَ عَلَيْكُم مِّسْكِينٌ
24
অদ্য যেন কোন মিসকীন ব্যক্তি তোমাদের কাছে বাগানে প্রবেশ করতে না পারে। 
 
وَغَدَوْا عَلَى حَرْدٍ قَادِرِينَ
25
তারা সকালে লাফিয়ে লাফিয়ে সজোরে রওয়ানা হল। 
 
فَلَمَّا رَأَوْهَا قَالُوا إِنَّا لَضَالُّونَ
26
অতঃপর যখন তারা বাগান দেখল, তখন বললঃ আমরা তো পথ ভূলে গেছি। 
 
بَلْ نَحْنُ مَحْرُومُونَ
27
বরং আমরা তো কপালপোড়া, 
 
قَالَ أَوْسَطُهُمْ أَلَمْ أَقُل لَّكُمْ لَوْلَا تُسَبِّحُونَ
28
তাদের উত্তম ব্যক্তি বললঃ আমি কি তোমাদেরকে বলিনি? এখনও তোমরা আল্লাহ তা’আলার পবিত্রতা বর্ণনা করছো না কেন? 
 
قَالُوا سُبْحَانَ رَبِّنَا إِنَّا كُنَّا ظَالِمِينَ
29
তারা বললঃ আমরা আমাদের পালনকর্তার পবিত্রতা ঘোষণা করছি, নিশ্চিতই আমরা সীমালংঘনকারী ছিলাম। 
 
فَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ يَتَلَاوَمُونَ
30
অতঃপর তারা একে অপরকে ভৎর্সনা করতে লাগল। 
 
قَالُوا يَا وَيْلَنَا إِنَّا كُنَّا طَاغِينَ
31
তারা বললঃ হায়! দুর্ভোগ আমাদের আমরা ছিলাম সীমাতিক্রমকারী। 
 
عَسَى رَبُّنَا أَن يُبْدِلَنَا خَيْرًا مِّنْهَا إِنَّا إِلَى رَبِّنَا رَاغِبُونَ
32
সম্ভবতঃ আমাদের পালনকর্তা পরিবর্তে এর চাইতে উত্তম বাগান আমাদেরকে দিবেন। আমরা আমাদের পালনকর্তার কাছে আশাবাদী। 
 
كَذَلِكَ الْعَذَابُ وَلَعَذَابُ الْآخِرَةِ أَكْبَرُ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ
33
শাস্তি এভাবেই আসে এবং পরকালের শাস্তি আরও গুরুতর; যদি তারা জানত! 
 
إِنَّ لِلْمُتَّقِينَ عِندَ رَبِّهِمْ جَنَّاتِ النَّعِيمِ
34
মোত্তাকীদের জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে নেয়ামতের জান্নাত। 
 
أَفَنَجْعَلُ الْمُسْلِمِينَ كَالْمُجْرِمِينَ
35
আমি কি আজ্ঞাবহদেরকে অপরাধীদের ন্যায় গণ্য করব? 
 
مَا لَكُمْ كَيْفَ تَحْكُمُونَ
36
তোমাদের কি হল ? তোমরা কেমন সিদ্ধান্ত দিচ্ছ? 
 
أَمْ لَكُمْ كِتَابٌ فِيهِ تَدْرُسُونَ
37
তোমাদের কি কোন কিতাব আছে, যা তোমরা পাঠ কর। 
 
إِنَّ لَكُمْ فِيهِ لَمَا يَتَخَيَّرُونَ
38
তাতে তোমরা যা পছন্দ কর, তাই পাও? 
 
أَمْ لَكُمْ أَيْمَانٌ عَلَيْنَا بَالِغَةٌ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ إِنَّ لَكُمْ لَمَا تَحْكُمُونَ
39
না তোমরা আমার কাছ থেকেকেয়ামত পর্যন্ত বলবৎ কোন শপথ নিয়েছ যে, তোমরা তাই পাবে যা তোমরা সিদ্ধান্ত করবে? 
 
سَلْهُم أَيُّهُم بِذَلِكَ زَعِيمٌ
40
আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করুন তাদের কে এ বিষয়ে দায়িত্বশীল? 
 
أَمْ لَهُمْ شُرَكَاء فَلْيَأْتُوا بِشُرَكَائِهِمْ إِن كَانُوا صَادِقِينَ
41
না তাদের কোন শরীক উপাস্য আছে? থাকলে তাদের শরীক উপাস্যদেরকে উপস্থিত করুক যদি তারা সত্যবাদী হয়। 
 
يَوْمَ يُكْشَفُ عَن سَاقٍ وَيُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ فَلَا يَسْتَطِيعُونَ
42
গোছা পর্যন্ত পা খোলার দিনের কথা স্মরণ কর, সেদিন তাদেরকে সেজদা করতে আহবান জানানো হবে, অতঃপর তারা সক্ষম হবে না। 
 
خَاشِعَةً أَبْصَارُهُمْ تَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ وَقَدْ كَانُوا يُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ وَهُمْ سَالِمُونَ
43
তাদের দৃষ্টি অবনত থাকবে; তারা লাঞ্ছনাগ্রস্ত হবে, অথচ যখন তারা সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল, তখন তাদেরকে সেজদা করতে আহবান জানানো হত। 
 
فَذَرْنِي وَمَن يُكَذِّبُ بِهَذَا الْحَدِيثِ سَنَسْتَدْرِجُهُم مِّنْ حَيْثُ لَا يَعْلَمُونَ
44
অতএব, যারা এই কালামকে মিথ্যা বলে, তাদেরকে আমার হাতে ছেড়ে দিন, আমি এমন ধীরে ধীরে তাদেরকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাব যে, তারা জানতে পারবে না। 
 
وَأُمْلِي لَهُمْ إِنَّ كَيْدِي مَتِينٌ
45
আমি তাদেরকে সময় দেই। নিশ্চয় আমার কৌশল মজবুত। 
 
أَمْ تَسْأَلُهُمْ أَجْرًا فَهُم مِّن مَّغْرَمٍ مُّثْقَلُونَ
46
আপনি কি তাদের কাছে পারিশ্রমিক চান? ফলে তাদের উপর জরিমানার বোঝা পড়ছে? 
 
أَمْ عِندَهُمُ الْغَيْبُ فَهُمْ يَكْتُبُونَ
47
না তাদের কাছে গায়বের খবর আছে? অতঃপর তারা তা লিপিবদ্ধ করে। 
 
فَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ وَلَا تَكُن كَصَاحِبِ الْحُوتِ إِذْ نَادَى وَهُوَ مَكْظُومٌ
48
আপনি আপনার পালনকর্তার আদেশের অপেক্ষায় সবর করুন এবং মাছওয়ালা ইউনুসের মত হবেন না, যখন সে দুঃখাকুল মনে প্রার্থনা করেছিল। 
 
لَوْلَا أَن تَدَارَكَهُ نِعْمَةٌ مِّن رَّبِّهِ لَنُبِذَ بِالْعَرَاء وَهُوَ مَذْمُومٌ
49
যদি তার পালনকর্তার অনুগ্রহ তাকে সামাল না দিত, তবে সে নিন্দিত অবস্থায় জনশুন্য প্রান্তরে নিক্ষিপ্ত হত। 
 
فَاجْتَبَاهُ رَبُّهُ فَجَعَلَهُ مِنَ الصَّالِحِينَ
50
অতঃপর তার পালনকর্তা তাকে মনোনীত করলেন এবং তাকে সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করে নিলেন। 
 
وَإِن يَكَادُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَيُزْلِقُونَكَ بِأَبْصَارِهِمْ لَمَّا سَمِعُوا الذِّكْرَ وَيَقُولُونَ إِنَّهُ لَمَجْنُونٌ
51
কাফেররা যখন কোরআন শুনে, তখন তারা তাদের দৃষ্টি দ্বারা যেন আপনাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দিবে এবং তারা বলেঃ সে তো একজন পাগল। 
 
وَمَا هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعَالَمِينَ
52
অথচ এই কোরআন তো বিশ্বজগতের জন্যে উপদেশ বৈ নয়। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন